রেকর্ড আছে কিন্তু দলিল নাই তবুও জমি আপনার।
কিভাবে সেটা জানার জন্য পোস্ট টি পড়ুন । অন্যকে জানতে পোস্টটি শেয়ার করুন এবং নিজে সেভ করে রাখুন।
আপনি যদি বলেন যে, জমির রেকর্ড আছে কিন্তু দলিল নেই, তাহলে আপনার জমির মালিকানা নির্ধারণের জন্য কিছু আইনি শর্ত পূরণ করতে হবে। রেকর্ড (খতিয়ান) আপনার জমির মালিকানা সম্পর্কিত একটি সরকারী রেকর্ড, তবে শুধুমাত্র রেকর্ড থাকলেই মালিকানা আইনি স্বীকৃতি পাওয়া যাবে না, কারণ দলিল হচ্ছে আইনি দলিল যা জমির মালিকানা প্রতিষ্ঠা করতে সহায়ক।
এক্ষেত্রে, জমি আপনার হবে কিনা, তা নির্ভর করবে বেশ কিছু মূল পয়েন্টের উপর। নিচে আমি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্লেষণ করছি:
১. অ্যাডভার্স পজেশন (Adverse Possession)
আপনার যদি জমির রেকর্ড থাকে কিন্তু দলিল না থাকে, তবে আপনি যদি সেই জমি অনেক বছর ধরে দখল করে রেখেছেন এবং অন্য কেউ যদি এই জমি দাবি না করে থাকে, তবে আপনি অ্যাডভার্স পজেশন বা অবৈধ দখলের অধিকার দাবি করতে পারেন।
আইনি শর্ত: বাংলাদেশে সাধারণত ১২ বছর অব্যাহত দখল করা হলে আপনি অ্যাডভার্স পজেশন আইন অনুযায়ী জমির মালিকানা দাবি করতে পারেন, যদি আপনার দখল অন্য কেউ চ্যালেঞ্জ না করে। তবে, এটি একটি জটিল আইনি প্রক্রিয়া এবং জমি মালিক বা অন্য কোনো পক্ষের বিরোধের মুখে পড়তে হতে পারে।
চলমান প্রক্রিয়া: এই প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য আপনাকে আদালতে অ্যাডভার্স পজেশন এর আবেদন করতে হবে এবং জমির দখলের প্রমাণাদি সরবরাহ করতে হবে।
২. জমির রেকর্ড থাকা এবং দলিল তৈরি
আপনার জমির রেকর্ড যদি সঠিক থাকে এবং আপনি যদি সেই জমির দলিল তৈরি করেন, তবে আপনার আইনি মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হবে। দলিল তৈরির মাধ্যমে আইনি মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং জমির রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
আইনি প্রক্রিয়া: আপনার জমির রেকর্ড যাচাই করার পর, আপনাকে নতুন দলিল তৈরি করতে হবে এবং সেই দলিল রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্টার করতে হবে। এর পর, জমি আইনি মালিকানায় আপনার নামে স্থানান্তরিত হবে।
৩. ভূমি অফিসে যাচাই
আপনার জমির রেকর্ড যদি সরকারি ভূমি অফিসে সঠিকভাবে রেজিস্টারড থাকে, তবে আপনি সেই জমির মালিক হয়ে যেতে পারেন। তবে, আপনি জমি বিক্রির বা হস্তান্তরের জন্য আইনি দলিল তৈরি না করলেই পুরোপুরি মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হবে না। তাই, আপনার জমির আইনি স্বীকৃতির জন্য দলিল তৈরি করা জরুরি।
আইনি প্রক্রিয়া: জমির রেকর্ড যদি সঠিক থাকে এবং কোনো আইনি সমস্যার সম্মুখীন না হন, তবে আপনি ভূমি অফিসে গিয়ে নতুন দলিল তৈরি এবং জমি রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। এতে আপনার মালিকানা আইনি স্বীকৃতি পাবে।
৪. খাস জমি বা সরকারি জমি
যদি আপনি দাবি করা জমি খাস জমি বা সরকারি জমি হয়ে থাকে, তাহলে সেই জমি আপনার হতে পারে না। খাস জমি বা সরকারি জমি আইনি অনুমতি ছাড়া দখল করা যায় না এবং এমন জমির মালিকানা দাবি করার জন্য সরকার থেকে অধিকার অর্জন করতে হবে।
আইনি শর্ত: খাস জমি বা সরকারি জমির মালিকানা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অর্জিত হয়, যেখানে সরকারি নীতিমালা অনুসরণ করতে হয়।
৫. উত্তরাধিকারী বা প্রাপ্তি
আপনি যদি পূর্ববর্তী মালিকের উত্তরাধিকারী হন এবং জমির রেকর্ড আপনার নামে থাকলেও দলিল না থাকে, তবে আপনাকে নতুন দলিল তৈরি করে আইনি মালিকানা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
আইনি প্রক্রিয়া: জমির পূর্ববর্তী মালিক মারা গেলে, তার উত্তরাধিকারী হিসেবে আপনি আইনি দলিল তৈরি করতে পারেন, তবে এর জন্য আপনাকে অংশীদারি আইন ও স্বীকৃতি নথি অনুযায়ী প্রমাণ সরবরাহ করতে হবে।
উপসংহার:
রেকর্ড থাকা মানে মালিকানা প্রমাণিত নয়, দলিল ছাড়া পুরোপুরি মালিকানা পাওয়ার জন্য আপনার নতুন আইনি দলিল তৈরি করতে হবে।
অ্যাডভার্স পজেশন (অবৈধ দখল) ব্যবহার করে, কিছু পরিস্থিতিতে ১২ বছরের অধিক সময় দখল করার মাধ্যমে আপনি জমির মালিকানা দাবি করতে পারেন, তবে এটি জটিল আইনি প্রক্রিয়া।
সরকারি জমি বা খাস জমি কখনো আপনার হতে পারে না, যদি না তা আইনি অনুমতি দ্বারা পরিগণিত হয়।
তাহলে, দলিল তৈরি এবং আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে জমি আপনার হবে।
https://slotbet.online/