— মানব জীবনের লক্ষ্য কি?🙏
🌺🙏এই ক্ষণিক অথচ দুর্লভ মনুষ্যজন্মে জন্ম -জরা- ব্যাধি-মৃত্যু তথা নানা দুঃখ ও উদ্বেগপূর্ণ জগতে এসে এই জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য ভগবানের নিত্য সেবায় নিযুক্ত হওয়ার জন্য প্রস্তুত হওয়া যাতে আর কখনো ভবচক্রে ফিরে আসতে না হয়।🙏
🌺– মানব জীবনের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হল-🙏
যে জীবনে জানা হল না যে,আমি পরমেশ্বরের নিত্য দাস,সেই জীবনে এই দুঃখময় জগতে সুখের অনুসন্ধান করা মূর্খামি মাএ। যে প্রকৃত অনুসন্ধান না করে কেবল এই নশ্বর জীবনটারই সব কিছু ভোগ করার জন্যই উদগ্রীব, তার জীবন অনর্থ ও কৃমিকীট।🙏
🌺– মানব জীবনে আধ্যাত্মবিদ্যার কি প্রয়োজন আছে?🙏
অন্যান্য পশুপাখী কীটপতঙ্গের জীবনের চেয়ে মানব জীবনই শ্রেষ্ঠ বা উন্নত,যেহেতু মানুষ জানতে চেষ্টা করে,আমি কে?কেন আমি জন্মেছি?কেন আমাকে মরতে হবে?কেন চিরকাল এই শরীরে সুখী হতে পারব না?জগৎ কি?কে বানিয়েছেন?জগতের সঙ্গে আমার সম্পর্ক কি?জগতের সৃষ্টিকর্তার পরিচয় কি?তার সঙ্গে আমার সম্বন্ধ কি?জন্ম মৃত্যু জরা ব্যাধি আমি চায় না,তবুও এগুলি কেন আমাকে গ্রহণ করতে হচ্ছে?এইগুলিই হল আধ্যাত্মবিজ্ঞানের বিষয়।🙏
🌺– বেদে বলা হয়েছে –
অথাতো ব্রহ্মজিজ্ঞাসা।আসল বিষয় জানবার চেষ্টা করা।এইগুলি যদি জানবার কারো প্রয়োজন না থাকে তবে তাকে নিছক পশু মাত্র বলেই শ্রীমদ্ভাগবত ব্যাখ্যা করেন।🙏
🌺🙏একটা কথা আমরা সবাই জানি যে ” মানুষের মাঝে স্বর্গ নরক মানুষেতে সুরাসুর।” যদিওবা স্বর্গ ও নরক পৃথক পৃথক গ্রহলোক রয়েছে এবং সুর বা দেবতা এবং অসুর বা দৈত্যরা বিশেষ বিশেষ গ্রহলোকের অধিবাসী তবুও পৃথিবীতে মানব সমাজে স্বর্গ ও নরকের দৃশ্য সচরাচর দেখতে পাওয়া যায় এবং সুর ও অসুর প্রকৃতির মানুষও দেখা যায়।এখনকার মানুষের সর্জীবের প্রতি ভালোবাসা,সহানুভূতি ও স্নেহযত্ন,এখানকার আলো,উদার আকাশ,মুক্ত বাতাস,সুনীল সমুদ্র,সবুজ ক্ষেত,পাখীর কুজন,ফুলের সৌরভ,ফলের বাগান ইত্যাদি স্বর্গীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে।আবার জীবহিংসা,কসাইখানা,মাতালের উওেজনা,কলহ বিবাদ,জোরজুলুম,খুনখারাবি,অবৈধ যৌনতা,রোগ ব্যাধি,দুর্ভিক্ষ,লুটপাট,ইত্যাদি নারকীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে।
সুরপ্রকৃতির লোকেরা হিংসাত্মক ঘটনায় জড়িত হন না।আমিষ ভক্ষণ করে না।কিন্তু অসুর প্রকৃতির লোকেরা সর্বদা নাস্তিক এবং আমিষভোজী,হত্যা,নেশাভাঙ ইত্যাদি করে।🙏
🌺– শ্রীমদ্ভগবদগীতায় শ্রীকৃষ্ণ নির্দেশ দিয়েছেন –
🙏সর্বধর্মান্ পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ ।
অহং ত্বাং সর্বপাপেভ্যো মোক্ষয়িষ্যামি মা শুচঃ ।।🙏
🌺🙏জড় জগতের বিচিত্র রকমের কর্তব্য বা ধর্ম পরিত্যাগ করে একমাত্র আমার শরণাগত যদি হও তবে সমস্ত রকমের পাপ থেকে আমি তোমাকে রক্ষা করব,সেই জন্য তোমার কোন দুশ্চিন্তা করার প্রয়োজন নেই।
এই রকম দৃঢ় প্রতিশ্রুতি একমাত্র পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ছাড়া ব্রহ্মান্ডের অন্য কেউ কোথাও প্রদান করেননি।অতএব শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা করাই শ্রেয়। শ্রীকৃষ্ণই হলেন সমস্ত জীবের বীজপ্রদ পিতা। তিনিই পরম গুরু।🙏
🌺– শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভু নির্দেশ দিয়েছেন –
🙏যে-ই কৃষ্ণতও্ববেত্তা সে-ই ‘গুরু’ হয়।🙏
(চৈতন্যচরিতামৃত মধ্য ৮/১২৭)
কৃষ্ণতত্ত্ববিদ ছাড়া কেউ ‘গুরু’হতে পারে না।
চক্ষু দিল যেই জন্মে জন্মে প্রভু সেই
দিব্য জ্ঞান হৃদে প্রকাশিত।🙏
প্রতি জন্ম মাতা পিতা সহজেই লাভ হয়।কিন্তু সব জন্মে পারমার্থিক গুরুকে পাওয়া যায় না।🙏
🙏সকল জন্মে পিতা মাতা সবে পায়,
কৃষ্ণ গুরু নাহি মিলে,ভজহ হিয়ায় ।।🙏
( চৈতন্যমঙ্গল)
🌺– চৈতন্যমঙ্গলে আরো বলা হয়েছে –
🙏সেই সে পরম বন্ধু,সেই পিতা মাতা,
শ্রীকৃষ্ণচরণে যেই পেমভক্তিদাতা।।🙏
🌺🙏আমাদের জীবনের চরম লক্ষ হল-
মুক্তি জীবনের মেয়াদ অতি অল্প। সকাল বিকাল অকাল নিয়ে কথা নয়,যে কোন কালেই যে কোন মুহূর্তই আমাদের ইহ জীবনের অন্তিমকাল হতেই পারে।সেই জন্য নারদ মুনি বললেন ‘মনুষ্য-জীবনের সেই আয়ুষ্কাল ধন্য যে আয়ুষ্কালে সে কৃষ্ণভক্তিতেকৃষ্ণসেবাতে নিযুক্ত আছে। কিছু সাধন ভজন করতে হবে যাতে অন্তিম কালে ভগবানের নাম গুনগান করতে করতে মরতে পারি।🙏
🙏🙏রাধে রাধে 🙏🙏