বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকার সবচেয়ে বড় কষ্ট,
ঘর থেকে দুই পা ফেলতে চাইলেও ভিসার জন্য শরণার্থীর মতো ঘুরতে হয়। যদিও বেশি টাকা পয়সার মালিক হলে এজেন্সি দিয়ে ডাবল খরচ করে কাজ সারা যায়। কিন্তু সেই সামর্থ্য সবার থাকে না। ভিসা ফ্রী যে কয়টা দেশ আছে তা দুনিয়ার আরেক মাথায়। ওদিকে যেতে খরচ এবং সময় দুইটাই ম্যানেজ করা বড্ড কঠিন!
আশেপাশে যেতে চাইলে,
চাতক পাখির মতো অ্যাপয়েন্টমেন্ট এর আশায় বসে থাকা লাগে। নিজে নিজে দুনিয়ার সব ডকুমেন্ট জড়ো করা লাগে। বহুদূর পারি দিয়ে নির্দিষ্ট অফিসের সামনে গিয়ে লাইন ধরা লাগে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা লাগে। একরাশ উৎকণ্ঠা নিয়ে কাজ শেষ হয়। দুই একটা ডকুমেন্ট মিসিং থাকলে দৌড়ানি শুরু। সেই রিপিটেড প্রোসেস।
সবুজ পাসপোর্ট নিয়ে যতো আবেগ ততোই জটিলতা। আগে একদিন বলেছিলাম, পাসপোর্ট হচ্ছে একমাত্র বই যার কভার দেখে মান বিচার করা হয়। এটা কেউ মানুক বা না মানুক। ভ্রমণ করার জন্য এক ভিসা করতে যা টাকা খরচ হয়, তা দিয়ে একটা হলিডে ট্যুর অনায়াসে দিয়ে ফেলা যায়।
এরপরেও ভাগ্য ভালো যে ভিসা পাচ্ছি। কিন্তু যারা পায় না, রিজেক্ট খায় তাদের ভাগ্য কেমনতর! আমার মনে হয় তারা ডিপ্রেশনে চলে যায়। এইজন্য না যে ভিসা রিফিউজ হয়েছে বরং এইজন্য যে শুধুমাত্র বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেখে তাদের রিফিউজ করে দিয়েছে।
অনেকের মনে হতে পারে, তা এত কষ্ট করে ইংল্যান্ডের বাইরে ঘুরতে যাওয়ার দরকার কি?
ঘুরাঘুরি পছন্দ বটে। এর বাইরে আর একটা কারণ আছে। যন্ত্রের মতো একটানা কাজ করা। কাজ করা ছাড়া উন্নত দেশে টিকে থাকা যায় না। এখানে কেউ অলস সময় কাটায় না। কেউ কেউ ছলেবলে কৌশলে কাটায়। কিন্তু তাতে আত্মসম্মান বোধ বলে কিছু থাকে না। সে পথে না হেঁটে বরং দু’চার দিন আল্লাহর দুনিয়ার সৌন্দর্য যদি কিছু দেখা যায় তা একটা বড় রকমের ব্যক্তিগত অর্জন বলে মনে হয়।
সবুজ পাসপোর্ট নিয়ে আবেগ নেই তা নয়। কিন্তু আবেগের চেয়ে কষ্ট বহুগুণ বেশি। অন্তত আমাদের মতো ছাপোষা মানুষদের। তবুও সবজায়গা যুদ্ধ করতে করতে গা সওয়া হয়ে গেছে আরকি!
https://slotbet.online/