বহুদিন আগে আমার বাবা তাঁর খালি জমিতে একটা গরিব পরিবারকে থাকতে দিয়েছিলেন।
বেশ কয়েক বছর পর বাবা বাড়ি করার জন্য জমিটা ছাড়তে বললে তারা ছাড়তে রাজি হলো না। পরে অনেক কায়দা করে, টাকা পয়সা দিয়ে তাদেরকে সরানো হয়েছিল।
শুনে যা বুঝলাম, সেটা হলো একটা জমিতে অনেকদিন থাকলে নাকি তাতে তার অধিকার জন্মে যায়।
আমি তো অবাক। দয়া করে থাকতে দিয়েছে। কোথায় কৃতজ্ঞ হবে, সেটা নয় উল্টো দখল করে বসে আছে। ভাবলাম জমির ব্যাপার তো
তাই লোভ সামলাতে পারে নি।
🎇আমি যেখানে থাকি সেখানে এক রিক্সাওয়ালা আছে আমার দেশি। বাজারে সে থাকলে আমি তার রিক্সাতেই আসি। বাজার থেকে আমার বাড়ি পর্যন্ত ভাড়া ৪০ টাকা ফিক্সড। তবে আমি নিয়মিত ৫০ টাকা দিতাম।
একদিন আমার কাছে খুচরা ৪৫ টাকা ছিলো। ঐ টাকাই দিলাম। টাকাটা দেয়ার সাথে সাথে একরকম চিৎকার করে উঠলো, “ আর ৫ টাকা ? ” আমি কিছুক্ষন চুপ থেকে বললাম, ” ভাড়া তো ৪০ টাকা, বাকি ৫ টাকা ফেরত দেন। “লোকটা হেসে বলল না সব সময়তো ৫০ টাকা দেন তাই বললাম। ভাবলাম থাক গরিব মানুষ তো, তাই এমন করলো।
🎇আমার এক প্রতিবেশী।
রোজ বাচ্চাকে স্কুলে দিতে যায়। তার দুধ ওয়ালা, সে ফেরার আগে দুধ নিয়ে আসে। আমি বাড়িতে না থাকায় সেই দুধ নেয়ার দায়িত্বটা আমার কাজের লোকের উপর পড়ে।
প্রতিবেশি হিসেবে এটুকু উপকার তো করতেই হয়। একদিন আমার কাজের লোকটি কোথাও একটা কাজে গেছে, দুধটা আর নেয়া হয়নি।
আমি বাড়ি ফেরার পর উনি এসে বললেন,
” আপনার কাজের লোক কোথায়? ”
— একটু বাইরে গেছে।
–আমাকে আগে বলল না। দেখুনতো আমার ছোট ছেলেটা এখন কি খাবে ?
আগে বললে আমি অন্য কাউকে দায়িত্ব দিতাম।
–বৌদি ও হয়তো ভুলে গেছে।
— যাই বলুন কোনো দায়িত্ব নিলে ঠিক ভাবে পালন করতে হয়।
–বৌদি ও হয়তো আপনার এই দায়িত্বের জন্য উপযুক্ত পারিশ্রমিক পায়নি তাই অবহেলা করেছে। আপনি বরং দায়িত্বটা অন্য কাউকে দিন।
সে কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থেকে গটগট করে চলে গেলো।
ভাবলাম, অল্প শিক্ষিত মহিলাতো তাই এমন আরকি।
🎇আমার এক কলিগ। গর্ভবতী অবস্থায় অফিসে কাজ করেন, আমি তাঁর কষ্ট দেখে তার একটা কাজের দায়িত্ব নিজে থেকেই নিলাম।
সে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে গেলেন। তিনি ফিরেও এলেন। তাঁকে কাজটা ফিরিয়ে দিতে চাইলে তিনি গরিমসি শুরু করলেন। ভাবটা এমন যেন কাজটা আমারই ছিল। এবার ভাবনাটা বদলালাম।
আসলে মানুষ একটা সুবিধা বেশিদিন ভোগ করলে সেটাকে তার অধিকার ভেবে নেয়।
🎇ভুলে যায় –“It’s facility, not right.”
তাই শুধু সুবিধা দেয়া নয়, নেয়ার ক্ষেত্রেও সাবধান থাকা দরকার।
হিউম্যান বিহেভিয়ার খুব অদ্ভুত। এটা প্রায় সবার ক্ষেত্রেই কাজ করে।
🎇টিউশনি করানোর সময় আন্টি প্রতিদিন টিফিন দিতেন। হঠাৎ টানা ২-৩ দিন না দেয়ায় আমার খুব খারাপ লেগেছিল।
পরে অবশ্য আমার নিজের আচরণে আমি নিজেই অবাক হই। আমার সাথে তো কখনো অভিভাবকের টিফিন নিয়ে চুক্তি হয়নি,
তাঁরা তো আমাকে টিফিন দিতে বাধ্য নন।
বরং টিফিন দেয়ার জন্য আমার তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত ছিল।
কোনটা অধিকার আর কোনটা অতিরিক্ত পাওনা, সেটা বোঝা জরুরি।।
👉রিপোষ্ট। পুরনো গল্প নতুনদের জন্য।
সুত্র : ফেসবুক
https://slotbet.online/