নাটোরের মেয়ে ফরিদা পারভিন মূলত: লালন গীতি গেয়ে জনপ্রিয়তা পেলেও বেশ কিছু দেশাত্মকবোধক এবং আধুনিক গান গেয়েছেন। সেই গানগুলোর গীতিকার এবং সুরকার তাঁর প্রথম স্বামী আবু জাফর।
আবু জাফর (১৫ মে ১৯৪৩ – ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪) প্রথমে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ও পরবর্তীতে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। নিজেও গান গাইতেন।
তাঁর লেখা- ‘এই পদ্মা এই মেঘনা’ বিবিসির (বাংলা) জরিপে সর্বকালের সেরা ২০টি গানের মধ্যে ১৭তম স্থান করে নিয়েছিল। যার সুমধুর কন্ঠে সমৃদ্ধ হয়ে আছে তিনি হচ্ছেন- ফরিদা পারভিন।
এছাড়াও ‘তোমরা ভুলেই গেছ মল্লিকাদীর নাম…., নিন্দার কাঁটা যদি না বিঁধিল গায়ে…., তুমি রাত আমি রাতজাগা পাখি… এক সময় তুমুল আলোড়ন তুলেছিল।
আমি বাংলাদেশ বেতারে গীতিকার হিসেবে তালিকাভূক্ত হই। অনেকটা সেই সুত্র ধরে তাঁদের সাথে পরিচয়। তাঁরা দুজন বেতারে-টিভিতে গান রেকডিং-এর জন্য মাঝেমধ্যে ঢাকায় আসতেন। একবার আমার মিরপুর বাসায় আতিথিয়তা গ্রহণ করেছিলেন। আজ সেই স্মৃতি মনে পড়ছে। মনে পড়ছে- ফরিদা আপার সেই অভিমানের কথা!
জাফর ভাই গান-বাজনা ছেড়ে ইসলামের পথে চলে গেলেন। সেখান থেকেই মূলত: তাঁদের দূরত্ব শুরু হয়। তারপর দুজনের দুটি পথ আলাদা হয়ে গেলো!
জাফর ভাই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। ফরিদা আপা ভীষণ অসুস্থ। আই সি ইউ-তে মৃত্যুর সাথে লড়ছেন। দুজনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁদের অমর সৃষ্টি তিনটি অসাধারণ গান নিবেদন করছি।
🌹
=================
এই পদ্মা, এই মেঘনা,
এই যমুনা-সুরমা নদী তটে।
আমার রাখাল মন, গান গেয়ে যায়
এই আমার দেশ, এই আমার প্রেম
আনন্দ বেদনায়, মিলন-বিরহ সংকটে।।
এই মধুমতি-ধানসিঁড়ি নদীর তীরে
নিজেকে হারিয়ে যেন পাই ফিরে ফিরে।
এক নীল ঢেউ কবিতার প্রচ্ছদ পটে।।হেডফোনের সেরা অফার
এই পদ্মা, এই মেঘনা,
এই হাজার নদীর অববাহিকায়।
এখানে রমণীগুলো নদীর মতন
নদীও নারীর মতো কথা কয়।।
এই অবারিত সবুজের প্রান্ত ছুঁয়ে
নির্ভয় নীলাকাশ রয়েছে নুয়ে
যেন হৃদয়ের ভালোবাসা হৃদয়ে ফুটে।
=========
তোমরা ভুলেই গেছ মল্লিকাদীর নাম
সে এখন ঘোমটা পড়া কাজল বধু দূরের কোন গাঁয়
পথের মাঝে পথ হারালে আর কি পাওয়া যায়।।
বৃষ্টি ঝরা পথের ধারে আম কুড়োতে এসে
ভেজা হাতে ডাকলো আমায় বললো ভালবেসে
এখানে আম কুড়োবার ধুম লেগেছে।
চল না অন্য কোথাও যাই
পথের মাঝে পথ হারালে আর কি পাওয়া যায়
যে দিন গেছে সেদিন কি আর ফিরিয়ে আনা যায়।।
দুপুর বেলা মল্লিকাদীর আটচালাতে গিয়ে
পুতুল খেলার ছল করেছি হৃদয় দিয়ে নিয়ে।
সে কথা ভাবলে এখন বর্ষা নামে।
দুচোখে সজল বরষা
যে দিন গেছে সেদিন কি আর ফিরিয়ে আনা যায়?
=============
নিন্দার কাঁটা যদি না বিঁধিল গাঁয়ে
প্রেমের কী স্বাদ আছে বলো
আঁধার না থাকে যদি কী হবে আলোর
প্রেমের কি স্বাদ আছে বলো
বাঁশি ডেকে বলে যমুনাকে
অপবাদ যতই আসুক
রাই কি কখনও ঘরে থাকে
কলঙ্ক না লাগে যদি
ভালোবেসে লাগে কী ভালো
হৃদয়ের যমুনাকে জানি
লাজ-ভয় সুনীল জলে
ধুয়ে যাবে যত কানাকানি
ফুলের মুখে কান দিয়ে
বিনোদিনী কূল খুঁজে নিল!
#সংগ্রহীত,,
https://slotbet.online/