• November 14, 2025, 8:43 am
শিরোনাম
চার সংগঠনকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ঘোষণা করল যুক্তরাষ্ট্র শার্শায় কৃষকের বাড়ি ভাংচুর ও বোমা হামলা ঘটনার মুল হোতা তোতা আটক যশোর জেলা যুবদলের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক আলোচিত জনি ডিবি’র হাতে ঢাকায় আটক কর্ম আমাদের হাতে, কিন্তু তার ফল নয় সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার ইসলামকাটি গ্রামের দিন মজুর সুকলাল দাস ও কণিকা দাসের কন্যা পুষ্পমালা দাস রাধা-কৃষ্ণের নিত্য পূজার জন্য কিছু সাধারণ নিয়মা বলী নিচে দেওয়া হলোঃ যারা কুমিল্লার মুরাদনগরের বোনটির চরিত্রের ব্যবচ্ছেদ করছেন শিব লিঙ্গ পূজা হিন্দু ধর্মে, বিশেষ করে শৈব সম্প্রদায়ে, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাসনা পদ্ধতি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের পাইলট নিহত, এফ-১৬ বিমান ভূপাতিত আজব দুনিয়া আজব নিয়ম এই সমাজে – কি করবেন এরা স্বামী-স্ত্রী কখনো দীর্ঘদিন দূরে থাকবেন না বেসরকারি চাকরিতে ভাইভা বোর্ডে সবচেয়ে বেশি জিজ্ঞেস করা হয় নিচের ৭৭ টি প্রশ্নঃ যারা আপনার সাফল্য বা সুখ সহ্য করতে পারে না, কে দিল এই নাম কোন সে পুরুষ? কার জন্য নারী হলো বে*শ্যা প্রশ্ন একটাই সফলতা পেতে হলে আগে নিজেকে ডেভলপ করতে হবে ফিনল্যান্ডের একটি রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা ভাস্কর্য কলকাতার সোনাগাছিতে ঘটে যাওয়া সত্য ঘটনা আমরা সবাই মানুষ ভারতে বাংলাদেশিদের কিডনি চুরির ঘটনায় ডাক্তার আটক ঐতিহ্য বহন করে চলেছে লালগোলার রথযাত্রা ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজের সামনে হঠাৎ এক বৃদ্ধ রিকসাওয়ালা আসলেন সরকারী দপ্তরের ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র শালিখা উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর ৪৮তম শাহাদৎ বার্ষিকী পালন। হিন্দু মহিলাকে পাকিস্তানে মাথা কেটে খুন মৃত্যুরহস্যের জট ছাড়াতে যাদবপুরের হস্টেলে নিয়ে যাওয়া হল ধৃত সপ্তককে, চলছে ঘটনার পুনর্নির্মাণ মাঝরাতে নেশায় চুর হয়ে এক মাতাল বাড়ি ফিরছে ফিরে দেখা ইতিহাস বাংলাদেশ ও ভারত এবং পাকিস্তান রাষ্ট্র মা কখনো বাড়ির পুরুষদের সাথে খান নি গাথুনী এবং প্লাস্টারের হিসাব(টাইমলাইনে রেখে দিন) মাগুরার শ্রীপুরের জমিদার বাড়ি ইউরোপের একটি দেশ যেখানে এই দৃশ্য অহরহ দেখতে পাবেন দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ফের ডেঙ্গুতে মৃত্যু ১০ জনের আমরা সবাই রাজা বাংলাদেশের প্রথম ধনী ও শিল্পপতি জহুরুল ইসলাম আপনার কি হাসি আসছে, হিরো আলম বই লিখেছে চলমান ও আসছে BDS বা বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে জরিপঃ বেদের মেয়ে জোসনা’র আয় মাত্র ৭ কোটি টাকা : দাবি আজিজের হারিয়ে যাওয়া এক বিখ্যাত পেশা-ভিস্তিওয়ালা। হিন্দি তো জাতীয় ভাষা! UP-র কোর্টে ওই ভাষায় সাক্ষী দিতে বাংলার কারুর অসুবিধা কোথায়?’ ভয়ংকর এক নারী প্রজন্মের অপেক্ষায় মাগুরায় অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের মাঝে বাইসাইকেল ও শিক্ষা সহায়তা সামগ্রী বিতরণ। সনাতন ধর্মের আদি পিতা ও আদি মাতা শালিখা চতুরবাড়িয়া বাজারে,বিএনপির আঞ্চলিক কার্যালয় শুভ উদ্বোধন। একজন নারী যদি তার মুখ বা কথা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে শালিখা চতুরবাড়িয়া বাজারে,বিএনপির আঞ্চলিক কার্যালয় শুভ উদ্বোধন মাগুরা শালিখায় ধানের শীষের কর্মী সভা -২০২৫ লন্ডনের ঝলমলে শহরে, এক নিরিবিলি অফিসরুমে বসে ল্যাপটপে রিপোর্ট লিখছিলেন ডা. মৌমিতা রায়। ডিভোর্স কেন বাড়ছে?” – ৯ মাসের বাস্তব গবেষণার ফলাফল দুই ভাইয়ের পাইলসের চিকিৎসার নামে ভয়ঙ্কর প্রতারণার অভিযোগ

‘তৈমুর লঙয়ের আক্রমণ ও দিল্লি সুলতানিতে ভাঙ্গন

Reporter Name 189 Time View
Update : শিরোনাম বুধবার, অক্টোবর ৪, ২০২৩

‘তৈমুর লঙয়ের আক্রমণ ও দিল্লি সুলতানিতে ভাঙ্গন’

তুঘলক বংশীয় সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলকের সুদীর্ঘ রাজত্বকাল (১৩৫১-১৩৮৮) দিল্লি সুলতানির ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। খলজী বংশীয় সুলতান জালালুদ্দিন খলজী দিল্লি সুলতানিতে প্রজাকল্যাণকামী রাষ্ট্রের যে আদর্শ তুলে ধরেছিলেন, ফিরোজ তুঘলক সেটাকেই অনুসরণ করেছিলেন। ফিরোজ জনগণকে সন্তুষ্ট করে চলবার নীতি অনুসরণ করেছিলেন (a policy of conciliation)। তৎকালীন অভিজাত, শাসক, সৈনিক, যাজক, কৃষক – সকলেই তাঁর পূর্বর্তী সুলতান মহম্মদ বিন তুঘলকের আচরণে অসন্তুষ্ট ছিলেন। দিল্লি সুলতানির দায়িত্ব নিয়েই ফিরোজ প্রথমে তাঁদের আনুগত্য ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। প্রথমদিকে কয়েকটি সামরিক অভিযান পরিচালনা করে ফিরোজ সেগুলিতে সাফল্যলাভ করতে পারেন নি, এরপরে তিনি যুদ্ধ পরিহার করে সুলতানি রাষ্ট্রের প্রজাকল্যাণ ও উন্নতির ওপরে জোর দিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হল যে, ফিরোজের ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি সংকীর্ণ ছিল। ধর্মের সংকীর্ণ ব্যাখ্যার ওপরে নির্ভর করে তিনি সমকালীন অন্যান্য সম্প্রদায় সম্পর্কে অসহনশীল নীতি অনুসরণ করেছিলেন। তাঁর প্রজাকল্যাণকামী রাষ্ট্রাদর্শ তাতে অবশ্যই ক্ষুণ্ণ হয়েছিল। ফিরোজ এমন কতগুলি প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়েছিলেন যেগুলি তাৎক্ষণিক সাফল্য আনলেও পরবর্তীকালে সেগুলোর জন্য সুলতানি রাষ্ট্রের ক্ষতি হয়েছিল। তাঁর আত্মজীবনী ‘ফুতুহাত-ই-ফিরোজশাহী’ গ্রন্থে প্রজাকল্যাণকামী রাষ্ট্রাদর্শের কথা পাওয়া যায়। তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে রাজ্য জয় নয়, সাম্রাজ্যের সম্প্রসারণ নয়, জনগণকে সুখী ও সন্তুষ্ট রাখাই তাঁর রাষ্ট্রনীতির মূল উদ্দেশ্য। অহেতুক রক্তপাত বন্ধ করে তিনি শাসক ও শাসিতের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করতে চেয়েছিলেন। মৃত্যুদণ্ড, অঙ্গচ্ছেদ, দৈহিক প্রহার, নির্যাতন ইত্যাদি তিনি বন্ধ করিয়ে দিয়েছিলেন। মহম্মদ বিন তুঘলকের সময়ে যাঁরা সেই ধরনের চরম শাস্তি পেয়েছিলেন, তিনি তাঁদের ক্ষতিপূরণ দানের ব্যবস্থা করেছিলেন। মহম্মদ বিন তুঘলক প্রদত্ত সব রাষ্ট্র ঋণ তিনি মাফ করে দিয়েছিলেন। কোরান ও শরিয়তের নির্দেশ অনুযায়ী তিনি দিল্লি সুলতানির শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করেছিলেন। উলেমারা তখন ইসলামী ধর্মশাস্ত্রের ব্যাখ্যাকার ছিলেন, দিল্লি সুলতানির শুরু থেকেই রাষ্ট্রের ওপরে ইসলামী প্রভাব পড়েছিল। মধ্যযুগের ভারতের ইতিহাসে ফিরোজ তুঘলক প্রথম কোন মুসলিম শাসক ছিলেন, যিনি কোরান ও শরিয়তের নির্দেশ অনুযায়ী রাষ্ট্রকে শাসন করেছিলেন। তিনি ভীতি ও ত্রাসের ওপরে প্রতিষ্ঠিত যে কোন ধরণের শাসনের বিরোধী ছিলেন। অর্থনৈতিক উন্নতি ও জনগণের সহযোগিতাই তাঁর রাষ্ট্রনীতি ছিল। নিজের বিরোধীদের তিনি কখনো কঠোর শাস্তি দেননি। তাঁর আগেকার সরকার সেকালের ধর্মজ্ঞ, বিদ্বান ও দরিদ্রদের যেসব নিষ্কর ভূমিগুলি অধিগ্রহণ করে নিয়েছিল, ফিরোজ পুনরায় সেগুলি তাঁদের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। ফিরোজ তাঁর সময়ে সুলতানি রাষ্ট্রে সেই ধরনের নিষ্কর ভূমির পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছিলেন (ইনাম, ইদরার)। বারানি জানিয়েছিলেন যে, সেইসব ব্যবস্থার ফলে তাঁর শাসন স্থিতিশীল হয়েছিল, তাঁর রাজ্যের ধনী-দরিদ্র সকলেই সন্তুষ্ট হয়েছিলেন, এবং হিন্দু-মুসলিম সকলেই তাঁদের নিজের নিজের কাজে মন দিয়েছিলেন। সমকালীন অন্যান্য সব লেখকের লেখা থেকে জানা যায় যে, সুলতান ফিরোজ শাহের চল্লিশ বছরের রাজত্বকালে সব ধরণের পণ্যের মূল্য সস্তা ছিল। ফিরোজের জীবনীকার শামস-ই-সিরাজ আফিফ লিখেছিলেন যে, সুলতান আলাউদ্দিনকে কঠোর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রবর্তন করে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে হয়েছিল, কিন্তু সুলতান ফিরোজের সময়ে কোনো ধরণের চেষ্টা ছাড়াই সারা দেশে সমস্ত ধরণের দ্রব্য সস্তা ছিল। সকলেই সেই স্বাচ্ছন্দ্যের ভাগ পেয়েছিলেন; বণিক, কারিগর সকলেই উৎপাদন ও মজুরি বৃদ্ধির ফলে লাভবান হয়েছিলেন। আফিফ তাঁর লেখায় সামগ্রিকভাবে ফিরোজের সময়ে দেশের সমৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেছিলেন। সেই সময়ের কৃষকদের কথা উল্লেখ করে আফিফ জানিয়েছিলেন যে, ফিরোজ শরিয়ত অনুযায়ী কর ধার্য করেছিলেন; তিনি সব ধরণের বেআইনি কর তুলে দিয়েছিলেন, এবং নতুন করে রাজস্ব (জমা) ধার্য করেছিলেন। জমি জরিপ নয়, তাঁর রাজস্ব ধার্যের নীতি ছিল উৎপন্ন ফসল; তাঁর সময়ে দেশে কখনো দুর্ভিক্ষ হয়নি।
উলসলি হেগ ফিরোজ তুঘলককে তাঁর গঠনমূলক কাজের জন্য রোমান সম্রাট অগাস্টাসের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। তিনি দিল্লিতে অনেকগুলি নতুন শহর নির্মাণ করেছিলেন। ফতেহাবাদ, হিসার, ফিরোজপুর, জৌনপুর ও ফিরোজাবাদ শহর তিনিই নির্মাণ করিয়ে দিয়েছিলেন। দিল্লির মসজিদ, মাদ্রাসা, মিনার, প্রাসাদ, সমাধিস্তম্ভগুলি তিনি সংস্কার করেছিলেন। ফিরিস্তা জানিয়েছিলেন যে, শুধু শহর নির্মাণই নয়, দিল্লির আশেপাশে তিনি বারোশো উদ্যান তৈরী করিয়েছিলেন। তিনি অনেকগুলি সুফি খানকা নির্মাণ করে দিয়েছিলেন, এবং সেগুলির জন্য নিষ্কর ভূমিদান করেছিলেন। সেকালের গঠনমূলক কাজগুলি তাঁর প্রতিভার আসল ক্ষেত্র ছিল। বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, বিধবা, অনাথ ও দুঃস্থদের জন্য তিনি রাষ্ট্রীয় অনুদানের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। কৃষিকাজের উন্নতির জন্য তিনি পাঁচটি নতুন খাল খনন করিয়ে দিয়েছিলেন। পথিক ও কৃষকদের জন্য তিনি আরও একশো পঞ্চাশটি কূপ খনন করেছিলেন। তিনিই ছিলেন দিল্লি সুলতানির প্রথম শাসক যিনি জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য সুলতানি প্রশাসনে বিভিন্ন সরকারি বিভাগ গঠন করেছিলেন। সেকালের বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য তিনি কর্মনিযুক্তি কেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন (Unemployment bureau)। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘দেওয়ানি খয়রাত’ বিভাগ রাষ্ট্রের গরীব, অনাথ, দুঃস্থ ও বিধবাদের সরকারি সাহায্য দিত। অধিকাংশ ক্ষেত্রে শুধুমাত্র তাঁর সাম্রাজ্যের মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষেরাই সেসব জনকল্যাণমূলক কাজের সুবিধা পেয়েছিলেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘দারুলসাফা’ সেকালের দরিদ্র মানুষদের বিনাব্যয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিল। ফিরোজ শাহ সংস্কৃতিরও পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন। দুটি অশোকস্তম্ভকে অক্ষত অবস্থায় দিল্লিতে নিয়ে এসে তিনি সেগুলিকে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলেন। নগরকোট আক্রমণকালে তিনি সেখানকার জ্বালামুখী মন্দির থেকে তিনশো সংস্কৃত পুঁথি সংগ্রহ করে নিজের পুঁথি সংগ্রহশালায় সংরক্ষণ করবার ব্যবস্থা করেছিলেন, তাঁর নির্দেশে সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি পুঁথি ফার্সি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল। রাষ্ট্রে শিক্ষা বিস্তারের উদ্দেশ্যে তিনি তিনটি কলেজ ও তিরিশটি মাদ্রাসা স্থাপন করেছিলেন। তাঁর নির্দেশে শিক্ষক ও ছাত্রদের স্টাইপেন্ডের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, শিক্ষাখাতে তিনি বার্ষিক ছত্রিশ লক্ষ টাকা ব্যয় করতেন। ক্রীতদাসদের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য তিনি তাঁদের শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করেছিলেন। তাঁর সময়ে ক্রীতদাসদের জন্য একটি পৃথক রাষ্ট্রীয় বিভাগ গঠন করা হয়েছিল। মধ্যযুগের ভারতে যুদ্ধ, রক্তপাত ও সাম্রাজ্য বিস্তার করাই মূলতঃ শাসকদের কাজ ছিল। সেই পরিবেশে জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রনীতির সূচনা করে তিনি অবশ্যই মধ্যযুগের ইতিহাসে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছিলেন।
১৩৫১ খৃষ্টাব্দে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলি দিল্লি সুলতানি বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল; গুজরাট, সিন্ধু ও বাংলা তখন বিদ্রোহ করে স্বাধীন হয়ে গিয়েছিল। ফিরোজ কোন বড় যোদ্ধা ছিলেন না। তিনি তাঁর সমগ্র রাজত্বকালে মোট সাতবার সামরিক অভিযান পরিচালনা করেছিলেন; দু’বার বাংলার বিরুদ্ধে, দু’বার সিন্ধু দেশে, এবং একবার করে জাজনগর, নগরকোট ও রোহিলখণ্ডে তিনি তাঁর সৈন্যবাহিনী পরিচালনা করেছিলেন। কিন্তু বাংলা ও দাক্ষিণাত্যকে তিনি পুনরায় জয় করতে পারেননি; সেই প্রদেশগুলি স্বাধীন হয়ে গিয়েছিল। বাংলায় তৎকালীন সুলতান ইলিয়াস শাহ ও তাঁর পুত্র সিকান্দার শাহ ফিরোজের আক্রমণ প্রতিহত করে দিয়েছিলেন। এরপরে ফিরোজ উড়িষ্যা আক্রমণ করে সেখানকার রাজার কাছ থেকে কর ও উপঢৌকন হিসেবে কিছু হাতি আদায় করেছিলেন। তারপরে ফিরোজ কাংড়া উপত্যকার নগরকোট রাজ্যটি আক্রমণ করে সেখানকার শাসকের বশ্যতা আদায় করেছিলেন। তিনি দু’বার সিন্ধুর থাট্টায় অভিযান চালিয়ে সেখানকার স্থানীয় শাসকদের কর ও আনুগত্য দানে বাধ্য করেছিলেন। থাট্টা অভিযানের পরে (১৩৬৫-৬৭) ফিরুজ আর কোন সামরিক অভিযান পরিচালনা করেননি; এরপরে তিনি তাঁর সাম্রাজ্যের সংহতি ও উন্নতিসাধন করবার দিকে নজর দিয়েছিলেন। তিনি রাষ্ট্র শাসনের কাজে মন দিয়েই রাষ্ট্রের মধ্যে বিভেদ দূর করে সংহতি স্থাপনের জন্য অভিজাত শ্রেণীর সমর্থন আদায় করবার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি মহম্মদ বিন তুঘলকের সময়কার অভিজাতদের সুলতানি প্রশাসনের উচ্চপদে নিয়োগ করেছিলেন। মহম্মদের অভিজাত খান-ই-জাহান মকবুল তাঁর উজির পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন, তিনি সুলতানের হয়ে শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করতেন। এছাড়া তাতার খাঁ, আইন-ই-মাহরুক, ইমাদউল মুল্ক প্রমুখ সকলেই তাঁর পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেছিলেন। তবে বিদেশী অভিজাতদের প্রতি তাঁর কোনো ধরণের দুর্বলতা ছিল না। তৎকালীন নিম্নবর্গের মানুষদের তিনি নিজের অভিজাত শ্রেণীতে গ্রহণ করেননি (mean and ignoble)। ফিরোজ তাঁর অভিজাতদের উচ্চ বেতন দিয়েছিলেন; তাঁর খান ও মালিকদের বার্ষিক বেতন ছিল চার থেকে আট লক্ষ টাকা, তাঁর উজির বছরে তেরো লক্ষ টাকা বেতন ও ভাতা পেতেন। এছাড়া ইকতা থেকেও তাঁরা রাজস্ব পেতেন। ফিরোজ তাঁর রাজত্বের শুরুতে যে রাজস্ব ধার্য করেছিলেন, পরে আর কখনো সেটাকে বাড়ানো হয়নি। তাঁর সময়ে রাষ্ট্রে কৃষিকাজ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে অভিজাতরা লাভবান হয়েছিলেন। ফিরোজই দিল্লি সুলতানিতে বংশানুক্রমিক অভিজাততন্ত্রের পত্তন করেছিলেন। কিন্তু তাঁর সেই নীতির ফলে কেন্দ্রীয় শাসন দুর্বল হয়ে গিয়েছিল, এবং অভিজাতরা শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলেন। ফিরোজের শাসনব্যবস্থায় অভিজাতদের পরেই সৈন্যবাহিনীর স্থান ছিল। সামরিক কাজে পটু এবং রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতায় আগ্রহী ব্যক্তিদের তিনি নিজের সৈন্যবাহিনীতে গ্রহণ করেছিলেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সৈনিকদের তিনি নগদ বেতন দিতেন না; তাঁদের দিল্লি ও দোয়াব অঞ্চলে ওয়াঝ দেওয়া হয়েছিল। তাঁর সময়ে কেন্দ্রের সৈন্যদের ৮০ শতাংশ ওয়াঝ পেয়েছিলেন। বাকি ২০ শতাংশ নগদ বেতন বা অভিজাতদের ইকতা থেকে বেতন পেতেন (ঘাইর ওজাহি)। সৈন্যদের ক্ষেত্রেও তিনি বংশানুক্রমিক নীতি প্রবর্তন করেছিলেন। তাঁর সময়ে একজন সৈন্য মারা গেলে তাঁর পুত্র ওয়াঝ পেতেন (গ্রামের রাজস্ব)। আর সেই পরিবারে কোনো পুরুষ না থাকলে মহিলারা ওয়াঝ পেতেন। ঐতিহাসিকদের মতে ফিরোজের সেই ব্যবস্থায় অবশ্যই ত্রুটি ছিল। তবে বংশানুক্রমিক নীতির চেয়েও তাঁর দাগ ও হুলিয়া প্রথা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তটি সুলতানি রাষ্ট্রের পক্ষে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির কারণ হয়েছিল। সুলতানি সৈন্যবাহিনীতে যে দুর্নীতি প্রবেশ করেছিল, সেকথা ফিরোজ নিজেও জানতেন। নিজের সৈন্যবাহিনীকে শক্তিশালী করবার জন্য তিনি ক্রীতদাস সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ক্রীতদাসদের একাংশ তাঁর সৈনিকের কাজ করতেন। তাঁদের সঙ্গে অভিজাত ও সৈন্যবাহিনীর বিরোধ সৃষ্টি হয়েছিল। সেই বিরোধের সুযোগ নিয়ে তাঁর উজির খান-ই-জাহান মকবুল ও তাঁর পুত্র জৌনা শাহ সুলতানি শাসনব্যবস্থার ওপরে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করেছিলেন; ফিরোজের সময়ে সেই পিতা ও পুত্রই দিল্লি সুলতানির ক্ষমতার কেন্দ্র ছিলেন।
খাজা হিসামুদ্দিন জুনাইদ ফিরোজের রাজস্ব মত্রী ছিলেন। দেশের জমি পরিদর্শন করে নিজের অনুমানের ওপরে ভিত্তি করে তিনি মোট ছয় কোটি পঁচাত্তর লক্ষা টাকা রাজস্ব ধার্য করেছিলেন, ফিরোজের সময়ে সেই জমার আর কোন পরিবর্তন করা হয়নি। তখন উৎপন্ন ফসল কৃষক ও রাষ্ট্রের মধ্যে ভাগ হত। ফিরুজ অনেকগুলি খাল খনন করিয়ে দিয়েছিলেন, তার ফলে কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছিল। তাঁর সময়ে রাষ্ট্র উপন্ন ফসলের ২০-৩০ শতাংশ রাজস্ব হিসেবে নিত। আফিফ লিখেছিলেন যে, ফিরোজের সময়ে শতদ্রু থেকে আলিগড় (কয়েল) পর্যন্ত সমগ্র অঞ্চলে শুধু কৃষিকাজ বৃদ্ধি পায়নি, শস্য চাষের ধরণেরও পরিবর্তন ঘটেছিল। তাতে শুধু অভিজাতরা নন; কৃষক, কারিগর ও বণিকেরাও লাভবান হয়েছিলেন। দেশের সেচ সেবিত অঞ্চলে তিনি প্রথমে ১০ শতাংশ বাড়তি জলকর বসিয়েছিলেন, তবে যেহেতু সেটি শরিয়ত অনুমোদিত ছিল না, তাই পরে অমন একুশটি কর তিনি তুলে দিয়েছিলেন। তিনি কোরান অনুমোদিত খারাজ, খোম, জিজিয়া ও জাকাত স্থাপন করেছিলেন। তাঁর সময়ে কৃষিকাজের উন্নতি হওয়ার ফলে নতুন শহর স্থাপিত হয়েছিল, সেই শহরগুলি শিল্প ও বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল। ফিরোজের ক্রীতদাস কারিগরেরা শহরের কারখানায় কাজ পেয়েছিলেন। তাঁর কৃষি ও নগর উন্নয়নের ধারণা আধুনিক ছিল। তিনি জনহিতকর কাজগুলি করবার জন্য সুলতানি প্রশাসনে একটি পৃথক বিভাগ গঠন করেছিলেন। পথিকদের জন্য তিনি অনেকগুলি বিশ্রামাগার নির্মাণ করে দিয়েছিলেন। ফিরোজ সঙ্গীত ভালোবাসতেন। সবেবরাত উৎসবের সময়ে তিনি নানা ধরণের অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতেন। তবে নিজের শেষজীবনে তিনি খানিকটা ধর্মান্ধ হয়ে পড়েছিলেন। প্রথমে তিনি সেকালের বিখ্যাত সূফী দরবেশ ফরিদউদ্দিনের শিষ্য ছিলেন, তবে তারপরে তাঁর উপরে তখনকার জঙ্গী দরবেশ সালার মাসুদের প্রভাবই সব থেকে বেশি পড়েছিল। এরপর থেকেই তিনি কঠোরভাবে ইসলামী আচার-আচরণ অনুসরণ করতে শুরু করেছিলেন। তারপরেই তিনি ব্রাহ্মণদের ওপরে জিজিয়া কর ধার্য করেছিলেন, এবং হিন্দুদের কয়েকটি মন্দির ধ্বংস করেছিলেন। শুধু তাই নয়, সমকালীন ইসমাইলি সম্প্রদায়ের প্রতিও তিনি সমানভাবে বিরূপ হয়েছিলেন, এছাড়া তিনি সূফীদেরও ক্ষমা করেননি। কিন্তু নিজের ধর্মীয় জীবনে তিনি যে পুরোপুরি অসহনশীল ছিলেন, সেকথা বলা যায় না। তাঁর সময়ে অনেক সংস্কৃত গ্রন্থের ফার্সি অনুবাদ করা হয়েছিল, রাষ্ট্রের হিন্দু প্রধানদের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক ভালো ছিল। ঐতিহাসিকদের মতে উলেমাদের প্রভাবেই তিনি অসহনশীল হয়ে উঠেছিলেন, এবং সেটার ফলে তাঁর জনকল্যাণকামী রাষ্ট্রনীতি ক্ষুণ্ণ হয়েছিল। তাঁর সময়ে সুলতানি রাষ্ট্রে হিন্দু ও মুসলমানদের নিয়ে যৌথ অভিজাততন্ত্র গঠনের প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিল, পরবর্তী সময়ে লোদিরা সেই নীতিকে পুনরায় অনেকটা ফিরিয়ে এনেছিলেন। স্যার হেনরি ইলিয়ট তাঁর লেখায় ফিরোজ শাহ তুঘলককে ‘সুলতানি যুগের আকবর’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। তবে অন্যান্য ঐতিহাসিকদের মতে, মধ্যযুগের ভারতের এই দুই রাষ্ট্রনেতার নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গিতে মৌল পার্থক্য ছিল। তাঁরা উভয়েই জনকল্যাণকামী ছিলেন – এছাড়া ইতিহাস থেকে তাঁদের মধ্যে বেশি মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। আকবর ভারতে মুঘল সাম্রাজ্যের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন, আর ফিরোজ সুলতানি সাম্রাজ্যের অনেকটাই হারিয়ে ফলেছিলেন। আকবর মূলতঃ ফিরোজের থেকে অনেক বেশি দূরদৃষ্টিসম্পন্ন শাসক ছিলেন, মধ্যযুগের ভারতের শাসনব্যবস্থার পুনর্গঠনে আকবরের মৌলিক অবদান অনস্বীকার্য। সেখানে ফিরোজ পুরনো শাসন ব্যবস্থার মধ্যে অল্প কিছু পরিবর্তন এনেছিলেন। ফিরোজ যেখানে স্বধর্মীদের স্বার্থে দেশ শাসন করেছিলেন ও উলেমাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন, আকবর সেখানে নিজের উদার সহনশীল দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিয়েছিলেন। আকবর যেখানে একটা জাতীয় রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন, সেখানে ফিরোজ তুঘলকের শাসনের ফলে দিল্লির সুলতানি শাসন দুর্বল হয়ে ভাঙনের পথে এগিয়ে গিয়েছিল।
ফিরোজ তুঘলকের শাসন শেষ হওয়ার আগেই দিল্লি সুলতানিতে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গিয়েছিল। শাহজাদা এবং সুলতানি তখতের উত্তরাধিকারী মহম্মদের সঙ্গে ফিরোজশাহের উজির দ্বিতীয় খান-ই-জাহানের বিরোধ বেঁধেছিল। মহম্মদ ফিরোজের সমর্থন নিয়ে উজিরকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিলেন, এরপরে শাহজাদা কার্যত তাঁর পিতার সহ-শাসক হিসেবে শাসনকার্য পরিচালনা করতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু ফিরোজের ক্রীতদাসরা (প্রায় এক লক্ষ) কেন্দ্রে সেই রাজনৈতিক পরিবর্তনকে পছন্দ করেন নি। এরপরে মহম্মদের সঙ্গে ক্রীতদাসদের বিরোধ শুরু হলে ফিরোজ ক্রীতদাসদের পক্ষ নিয়েছিলেন, এবং তার ফলে শাহজাদা মহম্মদ ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন। ১৩৮৮ খৃষ্টাব্দে ফিরোজের মৃত্যুর পরে শাহ্জাদাদের মধ্যে দিল্লির সুলতানি তখত নিয়ে লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছিল। ক্রীতদাসরা তখন প্রথমে তাঁদের নিজেদের পছন্দমতো ব্যক্তিকে সুলতানি তখতে বসানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন, এবং তারপরে তাঁরা পরাজিত হয়ে দিল্লি থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন। এরপরে একের পর এক শাহজাদা দিল্লি সুলতানির তখত অধিকার করেছিলেন, এবং অল্পকাল পরেই সরে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। অবশেষে ১৩৯৪ খৃষ্টাব্দে তুঘলক বংশের শেষ শাসক নাসিরুদ্দিন মাহমুদ দিল্লির তখত দখল করেছিলেন, তিনি ১৪১২ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত শাসন করেছিলেন। ইতিমধ্যে প্রাদেশিক গভর্নরেরা কেন্দ্রের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে একে একে স্বাধীন হয়ে গিয়েছিলেন; গুজরাট, পাঞ্জাব, মালব ও খান্দেশে সেই ঘটনা ঘটে। নাসিরুদ্দিন মাহমুদের উজির কনৌজ থেকে বিহার পর্যন্ত সমগ্র অঞ্চল শাসনের ভার পেয়েছিলেন। ওই ভাবে জৌনপুর রাজ্যের জন্ম হয়েছিল। রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রান্তের হিন্দু প্রধানরা রাজস্ব দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন, এবং দিল্লি সুলতানির আয়তন ক্রমশঃ হ্রাস পেতে শুরু করেছিল। সেই সময়ের প্রচলিত প্রবাদ – “সুলতানের শাসন চলে দিল্লি থেকে পালাম পর্যন্ত” – সমকালীন পরিস্থিতির প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায়।
এরপরে তৈমুরের ভারত আক্রমণ (১৩৯৮-৯৯) দিল্লি সুলতানি পতনকে ত্বরান্বিত করে তুলেছিল। তৈমুর দিল্লি ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলসমূহে যথেচ্ছ লুঠপাট চালিয়েছিলেন। তিনি সরাসরি ভারত আক্রমণ শুরু করবার আগেই, ১৩৯৬-৯৭ খৃষ্টাব্দ থেকে তৈমুরের পৌত্র উছ, দিপালপুর ও মুলতানের ওপরে আক্রমণ শুরু করে দিয়েছিলেন। তৎকালীন দিল্লির শাসকেরা সীমান্তের উত্তর-পশ্চিমে বিদেশী অনুপ্রবেশ নিয়ে মাথা ঘামাননি, এবং সেখানে প্রতিরোধমূলক কোনো ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হয়নি। দিল্লিতে নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড ও লুণ্ঠন চালিয়ে তৈমুর বহু বন্দী সহ দেশে ফিরে গিয়েছিলেন; ভারত থেকে তিনি বহু কারিগর ও মিস্ত্রীকেও তাঁর সাথে নিয়ে গিয়েছিলেন। লাহোর, দিপালপুর ও মুলতান তাঁর রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে সেটারই ভিত্তিতে বাবর দিল্লির ওপরে তাঁর দাবী পেশ করেছিলেন। ঐতিহাসিকেরা তৈমুরের ভারত আক্রমণের অন্য কোনো তাৎপর্য খুঁজে পাননি। তৈমুরের আক্রমণের পরে দিল্লি সুলতানি দ্রুত গতিতে ভেঙে পড়তে শুরু করেছিল। তবে কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে সেই পতনের জন্য দায়ী করা ঠিক নয়। মধ্যযুগের ভারতে বিচ্ছেদকামী শক্তিগুলি প্রবল ছিল। তখন অনেক স্থানীয় প্রধানের সঙ্গে তাঁর নিজের সম্প্রদায়ের লোকজন অথবা স্থানীয় মানুষের সমর্থন ছিল। সেযুগে কোন কারণে কেন্দ্রীয় সরকার দুর্বল হলেই তাঁরা রাজস্ব দেওয়া বন্ধ করে দিতেন। ফিরোজের আমলে দিল্লি সুলতানি দু’ভাবে তাঁদের প্রতিরোধ করবার চেষ্টা করেছিল – (১) ব্যক্তিগত ক্রীতদাস বাহিনী গঠন করে, এবং (২) সুলতানের ওপর নির্ভরশীল শাসকগোষ্ঠী স্থাপন করে। ইকতা সেই ব্যবস্থার ভিত্তি ছিল। কিন্তু সমস্যা ছিল যে, সুলতান শক্তিশালী উচ্চাকাঙ্ক্ষী অভিজাতদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন না। ফলে তাঁরা নিজেদের অধীনস্থ অঞ্চলগুলিতে স্বাধীন ক্ষমতাকেন্দ্র গড়ে তুলেছিলেন। দিল্লি থেকে দূরবর্তী প্রদেশগুলির (বাংলা, সিন্ধু, গুজরাট, দৌলতাবাদ) গভর্নরদের নিয়ন্ত্রণ করা তখন মোটেও সহজ ছিল না। সুলতানরা তাঁদের নিয়ন্ত্রণের জন্য জাতিগত ভিত্তিতে শাসকগোষ্ঠী গঠন করেছিলেন; এছাড়া মিশ্রগোষ্ঠীও গঠন করা হয়েছিল, এবং গুপ্তচরদের মারফত তাঁদের কাজকর্মের ওপরে নজর রাখা হয়েছিল। কিন্তু সেসব সত্ত্বেও তখনকার শাসকগোষ্ঠীকে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়নি। ফিরোজ তুঘলক বংশানুক্রমিক অভিজাততন্ত্র গঠন করে সেই সমস্যার সমাধানের একটা চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু শেষপর্যন্ত তিনিও ব্যর্থ হয়েছিলেন। সেই পরিস্থিতিতে ধর্ম কখনোই রাষ্ট্রের সহায়ক হয়নি। দিল্লি সুলতানিতে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব মূলতঃ মুসলমানদের নিজেদের মধ্যেই ছিল, সেটা হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে ছিল না। সেকালে হিন্দু কৃষক ও প্রধানদের সম্পদ লুঠ করবার জন্য অনেক সময়েই ধর্মের জিগির তোলা হত। সেকালে সৈন্যবাহিনীর নিয়োগ নিয়েও সমস্যা দেখা দিয়েছিল; মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ায় মোঙ্গল আক্রমণ শুরু হওয়ার পরে সুলতানরা সেই অঞ্চল থেকে আর সৈন্য সংগ্রহ করতে পারেন নি। সুলতানরা আফগান, তুর্কি বংশজাত, মোঙ্গল ও ধর্মান্তরিত মুসলমান এবং হিন্দুদের নিজেদের সৈন্যবাহিনীতে জায়গা করে দিয়েছিলেন। সেই সব জাতিগোষ্ঠীর সৈন্যদের পৃথক সমস্যা ছিল। ফিরোজ তুর্কি ও মোঙ্গলদের নিজের সৈন্যবাহিনীতে গ্রহণ করে বংশানুক্রমিক সৈন্যবাহিনী গঠনের চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর ক্রীতদাস বাহিনীতে ধর্মান্তরিত ভারতীয়রা ছিলেন, কিন্তু তাঁর সেইসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা সফল হয়নি। তাঁর সময়ের বংশানুক্রমিক সৈনিকেরা অদক্ষ, এবং ক্রীতদাস বাহিনী স্বার্থপর ও আনুগত্যহীন ছিলেন। তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে বিরোধে লিপ্ত হয়েছিলেন। এছাড়া উত্তরাধিকার নিয়েও সুলতানদের একটি বড় সমস্যা ছিল। তখন অভিজাতরা সুলতানের মনোনীত ব্যক্তিকে মেনে নিতে চাইলেও তখত নিয়ে পারিবারিক বিরোধের সৃষ্টি হত। ফলে অনেক সময়ে জ্যেষ্ঠ পুত্রের উত্তরাধিকার নীতি কার্যকর হত না। তাছাড়া কোন কারণে সুলতানের মৃত্যু ঘটলে তাঁর পুত্র ও পৌত্ররা তখতের দখলের লড়াইয়ে লিপ্ত হতেন, আর অভিজাতরা সেটার সুযোগ নিতেন। নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে তাঁরা বিবদমান শাহজাদাদের পক্ষ নিতেন, ফলে বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্রের উত্তরাধিকার দ্বন্দ্ব শেষপর্যন্ত রাজবংশের পতন ঘটাত।
মধ্য এশিয়ার সমরকন্দের শাসক তৈমুর ১৩৯৮ খৃষ্টাব্দে ভারত আক্রমণ করেছিলেন। তিনি একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও সাম্রাজ্যবাদী শাসক ছিলেন। তাঁর সাম্রাজ্যের মধ্যে তুর্কিস্তান, আফগানিস্তান, পারস্য, সিরিয়া, কুর্দিস্তান এবং এশিয়া মাইনরের একটি বড় অংশ ছিল। নিজের জীবনের শেষ দিকে তিনি ভারত আক্রমণের পরিকল্পনা করে ছিলেন। নিজের আত্মজীবনীতে (মালফুজত-ই-তৈমুরি) তিনি ভারত আক্রমণ করবার দুটি কারণের কথা উল্লেখ করেছিলেন – (১) বিধর্মীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পরিচালনা করে ‘গাজি’ হওয়া, এবং (২) বিধর্মীদের সম্পদ লুঠ করে নিজের শক্তি বৃদ্ধি করা। মূলতঃ ধর্মীয় ও পার্থিব – এই দুই কারণেই তিনি ভারত আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তৈমুর তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছিলেন, “My great object in invading Hindustan had been to wage a religious war against the infidel Hindus.” তারপরে তিনি আরও লিখেছিলেন, “… the army of Islam might gain something by plundering the wealth and valuables of the infidels.” তৈমুরের মধ্যে চেঙ্গিজ খানের নিষ্ঠুরতা এবং মাহমুদের উন্মত্ত আবেগের মিলন ঘটেছিল। তৈমুরের পৌত্র পীর মহম্মদ কাবুল, কান্দাহার ও গজনির শাসক ছিলেন। তৈমুরের আগেই তিনি ভারতে অভিযান পাঠিয়েছিলেন, সিন্ধু অতিক্রম করে তাঁর সৈন্যবাহিনী উচ ও মুলতান অধিকার করে নিয়েছিল। এরপরে তৈমুরের ভারতে প্রবেশের পথে আর কোনো বাধা অবশিষ্ট ছিল না। তুঘলক বংশের একেবারে শেষ দিকে মাহমুদ তুঘলক সুলতান হয়েছিলেন, তিনি দুর্বল ও অপদার্থ ছিলেন। তাঁর হয়ে মাল্লু নামে তাঁর এক মন্ত্রী শাসনকার্য চালাতেন। এর আগেই বাংলা, বাহমনি ও বিজয়নগর স্বাধীন রাজ্য হিসেবে নিজেদের স্থাপন করে নিয়েছিল। তুঘলকদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তখন গুজরাট, মালব ও জৌনপুরও স্বাধীন হয়ে গিয়েছিল। তৈমুরের প্রতিনিধি খিজর খান লাহোর, দিপালপুর ও মুলতান অধিকার করে নিয়েছিলেন। তৎকালীন ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে আরও কতগুলি ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়েছিল, এবং সেগুলি স্বাধীন হয়ে চলতে শুরু করেছিল। সামানা, বায়ানা, কল্পি ও মাহোবা তখন কেন্দ্রীয় সরকারকে মানত না। মোট কথা হল যে, ভারতের রাজনৈতিক ঐক্য তখন সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।
সেই পটভূমিতে ১৩৯৮ খৃষ্টাব্দের মার্চ-এপ্রিল মাসে তৈমুর ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। কাবুলের মুসলমানেরা তাঁর কাছে কাটোর ও সিয়াপোশের (কাশ্মীর ও কাবুলের মধ্যবর্তী অঞ্চল) হিন্দুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। তৈমুর নিজেকে ইসলামের রক্ষাকর্তা হিসেবে গণ্য করতেন। তাই তিনি প্রথমে কাটোর (Kator) ও সিয়াপোশের (Siahpoosh) বিরুদ্ধে নিজের সামরিক অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। কাটোরের বিধর্মীদের পরাজিত করে তিনি তাঁদের শহর আগুনে জ্বালিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। সেখানকার পুরুষদের হত্যা করা হয়েছিল, শিশু ও নারীদের বন্দী করা হয়েছিল, এবং সমস্ত সম্পদ লুন্ঠন করা হয়েছিল। পরে ভারত আক্রমণকালে তিনি সেই একই ধাঁচ অনুসরণ করেছিলেন। কাটোরে মৃতদের কঙ্কালের ওপরে তিনি নিজের বিজয় স্তম্ভ নির্মাণ করেছিলেন, এবং সেখানকার পর্বতগাত্রে নিজের বিজয়কাহিনী খোদিত করে দিয়েছিলেন। পথে আফগান উপজাতিদের বিদ্রোহ দমন করে তিনি ভারতের দিকে অগ্রসর হয়েছিলেন। ১৩৯৮ খৃষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি সিন্ধু অতিক্রম করেছিলেন। এরপরে ঝিলাম নদী বরাবর অগ্রসর হয়ে তিনি ভাতনির দুর্গ আক্রমণ করে সেটাকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। তারপরে তিনি সারসুতি অধিকার করে নিয়েছিলেন। সর্বত্রই তৈমুর একই ধরনের হত্যালীলা চালিয়েছিলেন। ভাতনির দুর্গের পতন সম্পর্কে তৈমুর তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছিলেন, “ইসলামের তরবারি বিধর্মীদের রক্তে ধোয়া হল। দুর্গের সব সম্পত্তি ও খাদ্যশস্য আমার সৈন্যরা অধিকার করে নিল। বাড়িগুলিতে আগুন লাগিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, সমস্ত অট্টালিকা ও দুর্গ মাটির সঙ্গে মিশে যায়।” পথে জাঠদের পরাজিত করে পানিপথ হয়ে তিনি দিল্লিতে প্রবেশ করেছিলেন। প্রথমে দিল্লির উপকণ্ঠে তাঁবু ফেলে তিনি তাঁর ঘোড়সওয়ারদের দিল্লি শহর লুণ্ঠনের জন্য পাঠিয়েছিলেন। তুঘলক বংশীয় সুলতান মাহমুদ তাঁর মন্ত্রী মাল্লুকে সঙ্গে নিয়ে তৈমুরকে বাধা দিয়ে পরাজিত হয়েছিলেন ও পালিয়ে গিয়েছিলেন। তৈমুরের সঙ্গে তখন এক লক্ষ বন্দী ছিল, কিন্তু বিদ্রোহের ভয়ে দিল্লিতে প্রবেশের আগে তিনি তাঁদের সকলকে হত্যা করেছিলেন। ঐতিহাসিকদের মতে সেটা পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম একটি নজিরহীন নিষ্ঠুরতার ঘটনা ছিল। দিল্লিতে প্রবেশ করে তৈমুর অভাবনীয় অত্যাচার, হত্যা ও লুণ্ঠন চালিয়েছিলেন। তৈমুর তাঁর নিজের আত্মজীবনীতে সেই বীভৎস তাণ্ডবের বর্ণনা রেখে গিয়েছেন। দিল্লি লুঠ করে তিনি বহু ধনরত্ন লাভ করেছিলেন। একমাত্র কয়েকটি মুসলমান অধ্যুষিত অঞ্চলগুলি ছাড়া দিল্লির আর কোনো অঞ্চলই তাঁর সেই হত্যা ও ধ্বংসলীলার হাত থেকে রেহাই পায়নি। তৈমুর লিখেছিলেন যে, দিল্লির অধিবাসীরা তাঁকে বাধা দিয়েছিল বলে হত্যা ও ধ্বংসের পরিমাণ বেশি হয়েছিল। গঙ্গা ও যমুনার তীরে নিজের ধ্বংসলীলা চালিয়ে তৈমুর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে নগরকোট ও জম্মুতে গিয়ে হাজির হয়েছিলেন। শেষে ১৩৯৯ খৃষ্টাব্দের মার্চ মাসে তিনি পুনরায় সিন্ধু অতিক্রম করে নিজের দেশে ফিরে গিয়েছিলেন।
ইতিহাস বলে যে, ভারতবর্ষের ওপরে যুগে যুগে বিদেশীরা আক্রমণ চালিয়েছিলেন। কিন্তু অতীতের কোনো আক্রমণকারীই নিজের একটি মাত্র অভিযানে ভারতের অতটা ক্ষতি করতে পারেননি যতটা তৈমুর একা করেছিলেন। বিধর্মীদের ধ্বংস করা, এবং তাঁদের সম্পদ লুঠ করাই তৈমুরের ঘোষিত লক্ষ্য ছিল। আসলে তৎকালীন ভারতের হিন্দু ও মুসলমান সকলেই তাঁর ওই অভিযানের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। দিল্লির তুঘলক বংশীয় শাসক মাহমুদের বিরুদ্ধেও তিনি লড়াই করেছিলেন; ধ্বংস ও লুঠ করাই তাঁর ভারত অভিযানের আসল উদ্দেশ্য ছিল। ধর্মকে তিনি স্রেফ নিজের আক্রমণের একটা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। তৈমুর ভারত থেকে বিদায় নেওয়ার পরে উত্তর ভারতের বিস্তৃত অঞ্চলে নৈরাজ্য ও অস্থিরতা দেখা দিয়েছিল। দিল্লি জনশূন্য হয়ে গিয়েছিল, অতকিছু সত্ত্বেও তখনও পর্যন্ত যাঁরা বেঁচে ছিলেন তাঁরা দুর্ভিক্ষ ও মহামারীর শিকার হয়েছিলেন। ইসলামের রক্ষাকর্তা নিজেই ইসলামের রাজধানীকে দুঃখ ও দুর্দশার মধ্যে নিক্ষেপ করেছিলেন। তৈমুরের ভারত অভিযানের পরেই দিল্লিতে তুঘলক বংশের পতন ঘটেছিল। মাহমুদ ও তাঁর মন্ত্রী মাল্লুর মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছিল, মাল্লু দিল্লির আশপাশের স্বাধীন অঞ্চলগুলি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন। মাল্লুর মৃত্যুর পরে মাহমুদ শাহ দিল্লিতে ফিরে এসেছিলেন। তবে তখন তিনি নামমাত্র শাসক ছিলেন, তাঁর পিছনে আসল শাসক ছিলেন দৌলত খান লোদি। মাহমুদ শাহের মৃত্যুর পরে দৌলত খান দিল্লি সুলতানির তখতে বসেছিলেন, তাঁকে পরাজিত করে খিজির খান দিল্লি অধিকার করে নিলে মধ্যযুগের ভারতের ইতিহাসে তুর্কি শাসনের অবসান ঘটেছিল। খিজির খান দিল্লির সুলতানিতে সৈয়দ বংশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন (১৪১৪)। তৈমুরের ভারত আক্রমণের সুদূরপ্রসারী তাৎপর্য এটাই ছিল যে, তিনি ভারতবর্ষ থেকে শুধু সম্পদই লুণ্ঠন করেননি, তিনি ভারতের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতাও সেকালের বিদেশীদের কাছে তুলে ধরেছিলেন। এরপরে তৈমুরের প্রদর্শিত পথ ধরে তাঁরই বংশধর বাবর ভারতবর্ষে সামরিক অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। দিল্লি জয় করে ভারতে তিনি মুঘল সাম্রাজ্য স্থাপন করেছিলেন। তৈমুর ফিরে যাওয়ার সময়ে ভারত থেকে বহু শিল্পী ও কারিগরকে তাঁর সঙ্গে নিজের দেশে নিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁরা মধ্যপ্রাচ্যের স্থাপত্য ও শিল্পের ওপরে ভারতীয় প্রভাব রেখেছিলেন। ওই সংস্কৃতির সমন্বয়ই তৈমুরের ভারত অভিযানের একমাত্র গঠনমূলক দিক ছিল। পরবর্তী সময়ে মুঘল যুগেও মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মুঘল শাসকদের যোগাযোগ বজায় ছিল।
©️রানা©️
(তথ্যসহায়ক গ্রন্থাবলী:
১- দিল্লি সুলতানি, রমেশচন্দ্র মজুমদার।
২- The Foundation Of Muslim Rule In India, A. B. M. Habibullah.
৩- The Legacy of Muslim Rule In India, K. S. Lal.
৪- State & Culture In Medieval India, Khaliq Ahmad Nizami.
৫- Tarikh-i Firoz Shahi: An English Translation by Ishtiyaq Ahmad Zilli.
৬- Tughlaq Naamah, Kusro Dehalvi, Edited by Hashmii Faridabadii Sayyed.
৭- Khaza Inul Futuh, Kusro Dehalvi, Edited by Muhammad Habib.
৮- Futuhu’s-Silatin, Edited by AGHA MAHDI HUSAIN.
৯- History Of Medieval India, Satish Chandra.
১০- History of Medieval India from 647 A.D. to the Mughal Conquest, Ishwari Prasad.
১১- A Comprehensive History of India: The Delhi Sultanate (A.D. 1206-1526), Edited by Mohammad Habib and Khaliq Ahmad Nizami.
১২- The Rehla of Ibn Battuta.
১৩- Shams Siraj Afifâ’s Tarikh-i Firoz Shahi.
১৪- Tughlaq Dynasty, Agha Mahdi Husain.
১৫- Tughlaq Dynasty; Lambert M. Surhone, Miriam T. Timpledon & Susan F. Marseken.
১৬- The Malfuzat Timuri; or, Autobiographical memoirs of the Moghul Emperor Timur, Abu Talib-al-Husayni.
১৭- The Tarikh-i-mubarak shahi, Translated by K. K. Basu.
১৮- Futuhat-I-Firoz Shahi, English translation, Cambridge University.)
©️রানা চক্রবর্তী©️


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

More News Of This Category
https://slotbet.online/