ঈদুল ফিতরের পরে মাগুরা জেলায় একজন সাংবাদিক সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। তার পূর্বে আরো দুইজন সাংবাদিক আক্রান্ত হন। তারপূর্বে চারজন মার্ডার হয়ে যায় এই জেলায়।থেমে থেমে খুন জখম সামাজিক ও রাজনৈতিক কারণে অব্যহত আছে। চারটি উপজেলার মধ্যে মুহাম্মদপুর আর শ্রীপুর হামলা মামলার সংখ্যা বেশি।
মাগুরা সদর ও শালিখায় অপেক্ষাকৃত কম।কিন্তু সামাজিক অস্থিরতা ছিলো ও আছে।বিভিন্ন পরিসংখ্যাণ সূত্র মতে, তারপরও মাগুরা জেলা দেশের মধ্যে বসবাসের জন্যে অপেক্ষাকৃত ভালো।বিভিন্ন সময়ে জেলায় বাসরত ও কর্মরত প্রতিনিধির ভাষ্যে এই রকমটি জানা যায়।পৃথিবীতে সমস্যা আছে, নানাবিধ সমস্যা আছে বাংলাদেশে। মাগুরা যেহেতু বিশ্বগ্রামের অংশ,বাংলাদেশের অপেক্ষাকৃত ছোট জেলা। এই জেলাতেও সমস্যা আছে,আছে অপার সম্ভাবনাও।
১৫ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে।উন্নয়ন ও অগ্রগতির ছোঁঁয়া লেগেছে আমাদের জেলাতেও।
২০২৩-২৪ সাল জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বছর। পক্ষ ও প্রতিপক্ষের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিলো, আছে এবং থাকবেই। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে পক্ষ ও বিপক্ষের দ্বন্দ্ব সংঘাতের নমূনা প্রকট হতে শুরু করেছে।কোথায় কিভাবে থামবে কেউ বলতে পারবেন না। ৫১ বছর বয়সী বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থাপনায় মানবতা বিরোধী অপরাধে জড়িত জামাতে ইসলামও ক্ষমতার অংশীদার হয়েছে। ডান বামও ক্ষমতার স্বাদ পেয়েছে।
এককভাবে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়েছে। স্বাধীনতা অর্জনের পরে আত্মপ্রকাশকারী দলসমূহের সকলেই স্বাধীনতা বিরোধী ছিলেন না। উল্লেখিত রাজনৈতিক দলসমূহ কিছু ব্যতিক্রম ব্যতিত মহান মুক্তিযুদ্ধের সমর্থন ছিলো। নির্মোহভাবে বিশ্লেষণ করলে, মুক্তিযুদ্ধে জামাত ছাড়া আর সকল দলের কর্মী সমর্থক আত্মাহুতি দিয়েছেন।
এতটুকু বিবেচনায় নিলে দেখা যায়, কোন দলের রাষ্ট্র পরিচালনার স্ট্রাটেজি কি তা সচেতন সকলেই জানেন।ব্যক্তি,পরিবার দল সম্পর্কে গোয়েবলসীয় প্রচার প্রোপাগান্ডায় সদ্য স্বাধীন দেশের সমূহ ক্ষতি হয়ে গেছে।
দেশে বাসরত ও চীন,রাশিয়া,ভারত ও আম্রিকান বশংবদ অনেক প্রতিনিধিদের বিশ্বাসঘাতকতায় পিছিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট জাতীরজনক ও তাঁর বংশধর সহ রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের হত্যার মাধ্যমে মিনি পাকিস্তানে রূপান্তর হয় রক্তের বিনিময়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক সংগঠন বিধস্ত দেশ পরিচালনায় নানামূখী সংকটে পড়ে।ক্ষমতার মোহ ও লোভে ব্যাপক জনসমর্থিত সংগঠন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায়।বিভক্তি দেখা দেয় ক্ষমতার দ্বন্দ্বে।সামরিক ও স্বৈরাচারী সরকার বন্দুকের নলের মাথায় রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে রাজনৈতিক ভ্যাকুয়াম সৃষ্টি করে।অরাজনৈতিক প্রতিনিধিরা রাজনৈতিক ভাবে পদায়ন হয়।সংকটের সৃষ্টি তখন থেকেই।
তারপর মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসে ১৯৯৬ সালে।টার্নিং পয়েন্ট হয় ৯৪ সালের মাগুরার উপনির্বাচন।
১৫ বছর জাতীর জনক কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ সরকার উন্নয়ন ও অগ্রগতি করেছে ব্যাপক।কিন্তু তথাপিও আওয়ামী লীগ সাংগাঠনিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে, হয়েছে বিভক্ত। সেই সুযোগ সৃষ্টি করেছে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধিদের অত্যাধিক ক্ষমতার মোহ ও লোভের কারণে।
দেশটির জন্মলগ্নে দেশী ও বিদেশী যারা বিরোধীতায় ছিলো,তারা এখনো সক্রিয় ও শক্তিশালী।
পৃথিবীর শক্তিশালী আম্রিকা পুরোনো খেলায় মেতে উঠেছে চেনা রূপে।বংশবদ শ্রেণি সুর মেলাচ্ছে তাদের সাথে। নানামূখী স্যাংসন ঘোষণা তার অংশ মনে করি।আমলা, জনপ্রতিনিধিসহ এলিট শ্রেণি এই ১৫ বছরে সন্তানাদি, স্ত্রী পরিজনসহ নিজে উন্নত ও বিলাশবহুল জীবনের লোভে আস্তানা গেড়েছে আম্রিকা সহ উন্নত রাষ্ট্রে।কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের এলিট শ্রেণি। সব মিলিয়ে উন্নয়নের রোল মডেল খ্যাত বাংলাদেশের জনবান্ধব সরকার পতনের হুঙ্কার দিয়েছে। এই হুঙ্কারে তিনটি শ্রেণি নড়েচড়ে বসেছে। ১.ক্ষমতার বাইরের দলসমূহ, ২.স্বাধীনতা বিরোধীরা ৩.ক্ষমতায় থাকা দুর্নীতিবাজ অংশ।
আত্মকলহ সৃষ্টি হলো তাদের প্রথম কাজ।ফলে, ক্ষমতাসীনরা নিজেরা নিজেদের প্রতিপক্ষ রূপে আর্বিভূত হয়েছে। সমগ্র দেশব্যাপী জনপ্রতিধিরা অবস্থান মজবুত করতে মাইম্যান সৃষ্টি করেছে।মাইম্যান ও ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার মোহে সাধারণ জনগণ থেকে বিছিন্ন হয়ে পড়েছে।ফলে, বদলে যাওয়া বাংলাদেশের কৃতিত্ব থাকা সত্ত্বেও নানা বিতর্ক দেখা দিয়েছে। একটি জেলায় ২ জন এমপি থাকলে, দুই গ্রুপ, বেশি থাকলে বেশি গ্রুপ, দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্ব, এমপির সাথে উপজেলা চেয়ারম্যানের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে। এভাবে জনগণ থেকে বিছিন্ন হয়ে গেছেন অনেকেই। এই সুযোগে প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে সংশয় ও সংকট সৃষ্টি করে বংশবদ একটি সরকার জাতীর ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার পায়তারা করছে।নেতায় নেতায় কর্মী থেকে সমর্থকদের মধ্যে এই ধ্বংসাত্মক খেলা অব্যহত আছে। বদলে গেছে বাংলাদেশ।তথ্য প্রযুক্তির ছোঁয়ায় সচেতন এখন বাংলাদেশের যুব সমাজ। ফলে,ষড়যন্ত্র করে সফল হতে পারবে না।
তবে, দেশের সমস্ত জনপ্রতিনিধিসহ পদ ও ক্ষমতা প্রত্যাশী নেতৃবন্দদের গৃহীত কর্মকান্ড একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে তদারকি বৃদ্ধি করতে হবে। জনবিছিন্ন নেতৃবৃন্দের মনোনয়ন বন্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক কর্মসূচী বৃদ্ধি করতে হবে। তাহলে, ৫১ বছর পূর্বে যে প্রতিপক্ষ পরাজিত, তারা বর্তমানে বিজয়ী হবে আমি বিশ্বাস করিনা। কেননা, #We are proud/We have one SHEIKH HASINA# উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রসহ সকল প্রকার গ্রুপিং বন্ধ করে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার নির্দেশনা মানতে হবে। তাহলে,সকল ষড়যন্ত্র পরাভূত হবে নিশ্চিত।
লেখা শুরু করেছিলাম মাগুরা জেলা থেকে। শেষ করার পূর্বে সূচনায় ফিরে এলাম। এখানে বিরাজমান দ্বন্দ্ব বাংলাদেশের সমগ্র চিত্রকল্পের অনুলিপি মনে করি।আশাবাদী মানুষ আমি। যত ষড়যন্ত্রই হোক,আওয়ামীলীগ ঐক্যবদ্ধ হলে, ইতিহাস বলে, ষড়যন্ত্র সফল হবেনা এবং জাতিরজনক কন্যার নেতৃত্ব দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ভূমিধ্বস বিজয় লাভ করে সরকার গঠন করবে। আসুন, বঞ্চিত ও শোষিত জাতি রাষ্ট্রের উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা বাস্তবায়নে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই।
সকলকে ধন্যবাদ জানাই।
লেখক : শ্রী ইন্দ্রনীল বিশ্বাস (সমকালীন রাজনীতির ভাবনা)
https://slotbet.online/